
SSC দিয়ে হাইস্কুলে শিক্ষক হিসেবে ঢুকলে মোটামুটি নিশ্চিন্ত থাকা যায়। কারণ দীর্ঘদিন ধরে দেখা গিয়েছে, এসএসসির মাধ্যমে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে যে শিক্ষকরা নিযুক্ত হন তাঁরা নিজে থেকে কোথাও ট্রান্সফার না চাইলে গোটা কর্ম জীবনটাই একই স্কুলে পড়িয়ে কাটিয়ে দিতে পারেন। এর ফলে যে শিক্ষকরা বাড়ির কাছাকাছির স্কুলে চাকরি পান তাঁদের খুবই সুবিধা হয়। স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা ট্রান্সফরের চেষ্টা করেন না।
তবে যে শিক্ষকরা বাড়ি থেকে দূরের স্কুলে চাকরি পান তাঁরা কয়েক বছর পরই উৎসশ্রী (Utsashree) পোর্টালের মাধ্যমে বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে বদলি নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গত এক বছরে এইভাবে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক নিজের বাড়ির কাছাকাছি বা কলকাতার কাছাকাছি স্কুলে ট্রান্সফর নিয়ে চলে এসেছেন। তাঁরা সকলেই হয়ত ভেবেছিলেন, যাক এবার নিশ্চিন্ত বাকি কর্ম জীবনটা বাড়ির কাছের স্কুলে পড়িয়েই কাটিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের একটি নির্দেশে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের ছোট্ট একটি সিদ্ধান্ত তাঁদের সকলের মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত আছড়ে পড়েছে!
রাজ্য সরকারের একটি সিদ্ধান্তে মহা ফ্যাসাদে পড়েছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির শিক্ষকরা। কারণ আর পাঁচটা সরকারি চাকরির মত এবার তাদেরকেও ট্রান্সফার করা শুরু হবে। এমনকি প্রয়োজন পড়লে কলকাতার শিক্ষককে পশ্চিম মেদিনীপুর বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন সংলগ্ন কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলেও বদলি করতে পারে স্কুল শিক্ষা দফতর। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশের ভিত্তিতে রাজ্য শিক্ষা দফতর ঠিক করেছে, এবার থেকে স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত দেখেই শিক্ষকদের রাখা হবে। আর তা করতে গেলে এক জায়গার শিক্ষককে অন্য স্কুলে পাঠানো যে আবশ্যক হয়ে উঠবে সেটা পরিষ্কার।
কীভাবে হবে শিক্ষকদের ট্রান্সফার?
উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে একজন শিক্ষক তাঁর পছন্দ বা সুবিধামত তিনটি স্কুল বেছে নিতে পারতেন। তার মধ্যে কোনও একটিতে তিনি বদলি নেওয়ার সুযোগ পেতেন। তবে এই গোটা ব্যবস্থাটাই এবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যে স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে অতিরিক্ত শিক্ষক থাকবেন, সেই স্কুল থেকে প্রয়োজনমতো কোনও একজন বা একাধিক বিষয় ভিত্তিক শিক্ষককে এমন স্কুলে বদলি করা হবে যেখানে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত অনুযায়ী কম শিক্ষক আছেন।
রাজ্য শিক্ষা দফতর এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও গাইডলাইন প্রকাশ না করলেও শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই বদলির ক্ষেত্রে বিষয়টাও (Subject) খুব জরুরি ভূমিকা নেবে। মানে পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত এলাকার কোনও স্কুলে যদি ইংরেজির শিক্ষকের অভাব থাকে, তবে স্রেফ কোটা পূরণের জন্য সেই জায়গায় সংস্কৃত শিক্ষককে বদলি করা হবে না। বরং কোনও স্কুলে অতিরিক্ত ইংরেজি শিক্ষক থাকলে তাঁকেই ওই স্কুলটিতে বদলি করা হবে।
More Update: বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে ৩ হাজার শূন্যপদে নতুন নিয়োগ
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশ মত রাজ্য সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়েছেন, এবার থেকে শিক্ষক বদলি এবং শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতই একমাত্র বিচার্য বিষয় হতে চলেছে। তাই শিক্ষককে নিজের জেলার মধ্যে তো বটেই, প্রয়োজনে অন্য জেলার স্কুলেও বদলি করা হতে পারে।
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, রাজ্যের শিক্ষকদের প্রবণতাই হল কলকাতা বা শহরতলীর স্কুলগুলিতে বদলি নিয়ে চলে আসা। তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, তাহলে গ্রামের স্কুলগুলিতে পড়াবে কে? ঘটনা হল গ্রামের স্কুলগুলিতে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত শিক্ষক দেখা যায় না। হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের নতুন শিক্ষক বদলি নীতি পড়াশোনার পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করবে বলেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
কোন শিক্ষকদের বদলি করা হবে না?
স্কুল শিক্ষা দফতর ঠিক করেছে, যে শিক্ষকরা শারীরিকভাবে অক্ষম অর্থাৎ প্রতিবন্ধী তাঁদের বর্তমান স্কুল থেকে অন্যত্র বদলি করা হবে না। এছাড়াও যে শিক্ষিকাদের সন্তানের বয়স অত্যন্ত কম তাঁদের এবং যে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবসর গ্রহণের আর মাত্র ২ বছর বা তার কম সময় বাকি আছে তাঁদের অন্যত্রভ বদলি করা হবে না। গার্লস স্কুলে কোনও পুরুষ শিক্ষককে বদলি করা হবে না। আপাতত এগুলো ঠিক হয়েছে। সম্পূর্ণ বদলে নীতি প্রকাশিত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে সূত্র মারফত খবর।
More Job update: মাধ্যমিক পাশে রাজ্যের মেট্রো রেলে কর্মী নিয়োগ
প্রতিদিন নতুন কোনো চাকরি এবং কাজের আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ অথবা টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হয়ে থাকুন।
গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কগুলি (Important Links)
✅ WHATSAPP GROUP: Click Here
✅ TELEGRAM GROUP: Click Here
🔥 আরো চাকরির আপডেট: WBP-র সাইবার ক্রাইম থানায় নিয়োগ
🔥 Daily Job Update: Click Here